avertisements
Text

সুদ সম্পর্কে কোরআন ও হাদিসের বাণী

| প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর, রবিবার, ২০১৯ | আপডেট: ৩ মে, শুক্রবার, ২০২৪

সুদ আসমানী সকল শরীয়তেই হারাম, নিষিদ্ধ। আল্লাহ তা‘আলা সুদ খাওয়া, সুদভিত্তিক লেনদেন করা হারাম করে দিয়েছেন। যারা সুদ খায় তাদের ঠিকানা জাহান্নাম বলে ঘোষণা করেছেন। সুদখোরের বিরুদ্ধে তাঁর ও তাঁর রাসূলের পক্ষ হতে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন। সুদ সংক্রান্ত কিছু কোরআন ও হাদিসের আয়াত নিম্নে দেয়া হলো: আল্লাহ তা‘আলা বলেন : ‘নিশ্চয় যারা ঈমান আনে ও নেক আমল করে এবং সালাত কায়েম করে, আর যাকাত প্রদান করে, তাদের জন্য রয়েছে তাদের রবের নিকট প্রতিদান। আর তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না। হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যা অবশিষ্ট আছে, তা পরিত্যাগ কর, যদি তোমরা মুমিন হও।কিন্তু যদি তোমরা তা না কর তাহলে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে যুদ্ধের ঘোষণানাও, আর যদি তোমরা তাওবা কর, তবে তোমাদের মূলধন তোমাদেরই থাকবে। তোমরা যুলম করবে না এবং তোমাদের যুলম করা হবে না’ (সূরা আল-বাকারা : ২৭৭-২৭৯)। সুদখোর, সুদদাতা, সুদী লেনদেনের সাক্ষী এবং সুদী লেনদেনের চুক্তি লেখক সবার প্রতিই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লানত করেছেন। হাদীসে এসেছে ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুদখোর, সুদদাতা, সুদের চুক্তি লেখক ও সাক্ষীদ্বয়ের প্রতি লানত করেছেন’ (মুসলিম)। যে এলাকায় সুদ ও যিনা প্রকাশ পাবে সে এলাকাবাসীর প্রতি আল্লাহর আযাব নাযিলের হুঁশিয়ারবাণীও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উচ্চারণ করেছেন। হাদীসে এসেছে : ‘যদি কোনো গ্রামে যিনা ও সুদ প্রকাশ পায়, তবে ওই গ্রামবাসী নিজদের ওপর আল্লাহর আযাব নাযিল করে নিল’ (আলবানী : সহীহুল জামে)।সসুদ সম্পদকে ধ্বংস করে দেয় ও সম্পদের বরকত মুছে ফেলে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন : ‘আল্লাহ সুদকে মিটিয়ে দেন এবং সাদকাকে বাড়িয়ে দেন। আর আল্লাহ কোনো অতি কুফরকারী পাপীকে ভালোবাসেন না’ (সূরা আল বাকরা : ২৭৬)। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন : ‘আর তোমরা যে সূদ দিয়ে থাক, মানুষের সম্পদে বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য তা মূলতঃ আল্লাহর কাছে বৃদ্ধি পায় না। আর তোমরা যে যাকাত দিয়ে থাক আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে (তাই বৃদ্ধি পায়) এবং তারাই বহুগুণ সম্পদ প্রাপ্ত’ (সূরা আর-রূম : ৩৯)। ‘যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে, যেভাবে দন্ডায়মান হয় ঐ ব্যক্তি, যাকে শয়তান আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়। তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছেঃ ক্রয়-বিক্রয় ও তো সুদ নেয়ারই মত! অথচ আল্লা’হ তা’আলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, পূর্বে যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যাপার আল্লাহর উপর নির্ভরশীল। আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই দোযখে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে।’ (সূরা আল বাকারা : ২৭৫)। ইসরা ও মিরাজের হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তিকে রক্তের নদীতে সাঁতার কাটতে দেখলেন। লোকটি যখনই নদী থেকে ওঠে আসার জন্য তীরে আসছে। এক ব্যক্তি পাথর হাতে তার মুখোমুিখ হচ্ছে এবং তার মুখ লক্ষ্য করে একটি পাথর ছুড়ে মারছে। অতঃপর নদীতে সাঁতরানো লোকটি পূর্বের জায়গায় ফিরে যাচ্ছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে উত্তরে বলা হলো যে লোকটি সুদখোর। আনাস রাযি. থেকে এক বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : ‘সুদের সত্তুরটি গোনাহ রয়েছে। তন্মধ্যে সর্বনিম্নটি হলো মায়ের সাথে যিনা করার তুল্য’ (ইবনে মাজাহ, সহীহ)। ইয়াহুদীদের সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন : ‘সুতরাং ইয়াহূদীদের যুলমের কারণে আমি তাদের ওপর উত্তম খাবারগুলো হারাম করেছিলাম,যা তাদের জন্য হালাল করা হয়েছিল এবং আল্লাহর রাস্তা থেকে অনেককে তাদের বাধা প্রদানের কারণে। আর তাদের সুদ গ্রহণের কারণে, অথচ তা থেকে তাদেরকে নিষেধ করা হয়েছিল এবং অবৈধভাবে মানুষের সম্পদ খাওয়ার কারণে। আর আমি তাদের মধ্য থেকে কাফিরদের জন্য প্রস্তুত করেছি যন্ত্রণাদায়ক আযাব’ (সূরা আন-নিসা : ১৬০)। আসুন আমরা সবাই অনতিবিলম্বে সকল প্রকার সুদের আদান প্রদান বন্ধ করি ও অন্যদেরও এ কাজে অনুপ্রানিত করি ।

avertisements