বিনাশুল্কে মদ আর শুল্ক দিয়ে খেজুর আমদানির তথ্য সত্য নয়

বাংলাদেশে মদ আমদানি হয় বিনাশুল্কে এবং খেজুর আমদানি করতে হয় শুল্ক দিয়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পাশাপাশি বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের দেওয়া এমন বক্তব্য একেবারেই সঠিক নয়। 

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআরের তথ্যে, দেশে মদ আমদানিতে কর পরিশোধ করতে হয় ৫৯৬ দশমিক ২ শতাংশ। এর মধ্যে সম্পূরক শুল্কই ৩৫০ শতাংশ। এদিকে খেজুরের আমদানিতে কর দিতে হয় ৪৩ শতাংশ।

ফেসবুকে গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ঘুরে বেড়ানো ভাইরাল পোস্ট হলো- ‘দেশে খেজুর আমদানি হয় ২০৮ শতাংশ শুল্ক দিয়ে, আর মদ আমদানি হয় বিনাশুল্কে’। এমন তথ্যকে আমলে নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস গত ২০ মার্চ রাজধানীতে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে বলেন বাংলাদেশ ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশ। এ দেশে মদ আমদানি হয় বিনা শুল্কে, আর খেজুর আমদানি হয় শুল্ক দিয়ে।

তবে এনবিআর এবং কাস্টমসের ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, মদ ও খেজুর এ দুটি পণ্য আমদানিতে কাস্টমসে নির্দিষ্ট পরিমাণ শুল্ক পরিশোধ করতে হয়। যাতে খেজুরের চেয়ে মদ আমদানিতে শুল্ক দিতে হয় অনেক গুণ বেশি। দুই লিটারের বেশি অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় আমদানিতে কর পরিশোধ করতে হয় ৫৯৬ দশমিক ২ শতাংশ। এর মধ্যে সম্পূরক শুল্ক সাড়ে তিন শ’ শতাংশ। ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক, নিয়ন্ত্রক শুল্ক ৩ শতাংশ এবং ১৫ শতাংশ ভ্যাটের পাশাপাশি ৫ শতাংশ করে অগ্রিম কর ও অগ্রিম আয়কর দিতে হয়। হিসাব অনুসারে ১০০ টাকার মদ আমদানিতে শুধু কর দিতে হয় প্রায় ৬০০ টাকা। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে বিদেশি কূটনীতিক, বিশেষ সুবিধাভোগী বিদেশি নাগরিকগণ কূটনৈতিক বন্ডেড ওয়্যারহাউস থেকে শুল্কমুক্ত সুবিধায় মদ কিনতে পারেন।

তথ্য বলছে খেজুর আমদানিতে মোট কর পরিশোধ করতে হয় ৪৩ শতাংশ। এর মধ্যে আমদানি শুল্ক ১৫ শতাংশ যা গত মাসেও ছিল ২৫ শতাংশ। এ ছাড়া নিয়ন্ত্রক শুল্ক, ভ্যাট, অগ্রিম কর ও আয়কর পরিশোধ করতে হয় সাধারণ নিয়মেই।

এ বিষয়ে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মজিদ বলেন, আমদানি শুল্ক ফাঁকি রোধ করতে হলে এনবিআরকে তৎপর থাকতে হবে। শুল্ক ফাঁকি রোধ করা যার কাজ ছিল তিনি কাজ করছেন কি না এটাই দেখার বিষয়। 

তিনি বালেন, ব্রিটিশদের একটা কথা গুরুত্বপূর্ণ। তা হলো- চোর তো চুরি করবেই। কিন্তু গৃহস্থকে সজাগ থাকতে হবে।