avertisements
Text

পিতা হারানো শোক, তা কি ভোলা যায়

| প্রকাশ: ১৫ আগস্ট, শনিবার, ২০২০ | আপডেট: ৩ মে, শুক্রবার, ২০২৪

বাঙালির ইতিহাস যেমন বীরের সাহসী গল্পগাঁথা, ঠিক তেমনি শোকের মাতম ও ব্যথায় ভরা। আমরা এমনই এক হতভাগা জাতি যারা নিজ পিতার রক্তে রঞ্জিত হয়েছি। যার পেছনে ছিল কিছু বিপদগামী লোভী সৈনিক। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালো রাত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমণ্ডির ৩২ নাম্বার বাড়িতে অতর্কিত হামলা করে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যের নির্মমভাবে হত্যা করে।
ঘৃণ্যতম এই হত্যাকাণ্ড বাঙালির ইতিহাসে অমুছনীয় ট্র্যাজেডি। কালে কালে যুগে যুগে যে শোক ফিরে ফিরে আসে এবং শোকের নদীতে ভাসিয়ে দেয় গোটা বাংলাদেশের মানুষ তথা সমগ্র বাঙালি জাতিকে।
১৫ আগস্টের শোক কখনোই ভোলার নয়, ভোলা যায় না, যাবে না।  ১৫ আগস্ট মানে বাঙালির অস্তিত্বে হুমকি। সেদিন জাতির পিতাকে হত্যার মাধ্যমে ঘাতকরা চেয়েছিল বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রকে হত্যা করবে, বঙ্গবন্ধুর চেতনাকে হত্যা করবে। কিন্তু ঘাতকরা বুঝেনি বঙ্গবন্ধুর তর্জনীর শক্তি শাশ্বত-চিরন্তন। যা বুলেটের ইরেজারে মুছা যায় না। বরং জীবিত মুজিবের চেয়ে, মৃত মুজিব বেশি শক্তিশালী।
এক মুজিরের আড়ালে কোটি মুজিবের আদর্শ আজ বাংলার জমিনে প্রতিশোধের মিছিল করে।
ঘাতকেরা এতটাই পাষণ্ড ছিল যে তারা বঙ্গবন্ধুর নাম নিশানা মুছতে সকল পরিবার-পরিজনকে হত্যা করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর নাম এখন বাংলাদেশের আকাশে-বাতাসে প্রতিনিয়ত প্রতিধ্বনিত হয়।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের সেই কালরাতে ঘাতকের হাতে নিহত হন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী শেখ ফজিলাতুননেছা, পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল, শেখ কামালের স্ত্রী সুলতানা কামাল, জামালের স্ত্রী রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর ভাই শেখ নাসের, এসবি অফিসার সিদ্দিকুর রহমান, কর্ণেল জামিল, সেনা সদস্য সৈয়দ মাহবুবুল হক, প্রায় একই সময়ে ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবলীগ নেতা শেখ ফজলুল হক মণির বাসায় হামলা চালিয়ে শেখ ফজলুল হক মণি, তাঁর অন্ত:সত্তা স্ত্রী আরজু মণি, বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াতের বাসায় হামলা করে সেরনিয়াবাত ও তার কন্যা বেবী, পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, নাতি সুকান্ত বাবু, আবদুর রব সেরনিয়াবাতের বড় ভাইয়ের ছেলে সজীব সেরনিয়াবাত এবং এক আত্মীয় বেন্টু খান। জাতি গভীর শোক ও শ্রদ্ধায়  তাদের  স্মরণ করবে আজীবন। তবে শুধু শোক-স্মরণে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। কারণ মুজিব আদর্শের শত্রুরা দেশ-বিদেশে সক্রিয়। তার প্রমাণ বারেবারে দেখা গেছে বিশেষত ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর নৃশংস গ্রেনেড হামলা। তাই জাতিকে সচেতন থাকতে যেন এ দেশে আর কখনও ১৫ আগস্টের মত কোনো ট্র্যাজেডি ফিরে না আসে। বাংলাদেশ হোক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের চেতনায় ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমৃদ্ধ সোনার বাংলা।

avertisements