avertisements
Text

‘মধ্যপ্রাচ্য-পরিস্থিতির নতুন মেরুকরণ’

| প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর, সোমবার, ২০১৯ | আপডেট: ৩ মে, শুক্রবার, ২০২৪

ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে হয়ে উঠছে মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি। সর্বশেষ সৌদি আরবের দুটি তেলক্ষেত্রে ইয়েমেনের ইরানপন্থী হুতি বিদ্রোহীদের ড্রোন  হামলার ভয়াবহতায় বিশ্বব্যাপী তেলের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে। ইয়েমেন থেকে ৭০০ মাইল উড়ে এসে ড্রোনের এমন নিখুঁত হামলা ইসরাইল-যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক চিন্তাকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। এক সময় মার্কিন নৌশক্তির অন্যতম প্রধান হাতিয়ার ছিল বিমানবাহী রণতরী।
কিন্তু ইরানের ড্রোন আর মিসাইল প্রযুক্তির অভাবনীয় উন্নয়ন মার্কিন বিমানবাহী রণতরীগুলো তো বটেই মধ্যপ্রাচ্যে তাদের সব দূতাবাস এবং সামরিক ঘাঁটিকে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ফেলে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র যখন আফগানিস্তানের চোরাবালি থেকে নিজেকে বের করে আনার জোর কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে ঠিক সেই সময়ে ইসরাইল এবং সৌদি-প্রভাবিত দেশগুলোর বিরামহীন প্ররোচনায় ইরান আক্রমণ করে সে পারস্য উপসাগরে নিজের নিমজ্জমান অবস্থাটা দেখতে চাইছে না।

ইরানের রাজনৈতিক এবং সামরিক প্রভাব এখন সিরিয়া,ইরাক, লেবানন এবং ইয়েমেন পর্যন্ত বিস্তৃত। তুরস্কে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর থেকে এরদোয়ানের আশীর্বাদ হারিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যে তুরস্ক আর ইসরাইলের অন্ধ সমর্থনে মধ্যপ্রাচ্যে একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র তার একটি এখন পুতিনের সাথে দোস্তি করেছে। ফিলিস্তিনের হামাস, লেবাননের হিজবুল্লাহ,ইয়েমেনের হুতি,ইরাকের হাশদ্ আশ শাবি এবং মধ্যপ্রাচ্যের উদীয়মান পরাশক্তি ইরানের হাতে বর্তমানে যে উন্নত প্রযুক্তির ড্রোন ও ব্যাপক ধ্বংসক্ষমতাসম্পন্ন স্বল্প, মাঝারি,  দূরপাল্লার লক্ষ লক্ষ ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে তা যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইলের সামরিক আধিপত্যের অহংকারকে চূর্ণ বিচূর্ণ করে দিয়েছে। তাই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আইরন ডোম থাকা সত্ত্বেও যুদ্ধবাজ নেতানিয়াহুকে সাইরেন শুনে নির্বাচনী মঞ্চ ছেড়ে দৌড়ে পালাতে হয়।

ইরানপন্থী হিজবুল্লাহর প্রতিশোধ হামলার ভয়ে ইসরাইলকে নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়। প্রকৃতপক্ষে ইরান-রাশিয়া-তুরস্কের সহাবস্থানের কারণে মধ্যপ্রাচ্যের
রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরালের কর্তৃত্বের দিন শেষ হয়ে গেছে।

লেখক : শাহীনূর রশিদ, কবি ও শিক্ষক 

avertisements